বর্তমানে গোটা বিশ্বে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা অনেকটাই বেড়েছে । পাশাপাশি এই খেলার পিছনে একটা লম্বা ইতিহাসও রয়েছে। যারা এই খেলায় নতুন পা রাখতে চলেছ, তাদের কাছে বেশ কয়েকটা নিয়ম, একটু খটমট লাগতেই পারে। তবে অধিকাংশ ক্রিকেট সমর্থকদের কাছেই এইসব নিয়ম একেবারে অজানা নয়। আসুন আজ এমনই ন'টি নিয়মে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
১. মাঁকড় নিয়ম :
ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম বিতর্কিত এই মাঁকড় নিয়ম। ভারতীয় ক্রিকেটার বিনু মাঁকড়ের নাম অনুসারে এই নিয়মটি রাখা হয়েছে। এই নিয়ম অনুসারে, বোলারের ডেলিভারি ছাড়ার আগে যদি নন স্ট্রাইকার এন্ডে ব্যাটসম্য়ান ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে যান, তাহলে বোলার নিজের ডেলিভারি থামাতে পারবেন এবং নন স্ট্রাইকার এন্ডে বল ছুঁড়ে উইকেট ভাঙতে পারবেন। তাহলে ওইsd ব্যাটসম্যানকে আউট করে দেওয়া হবে। নন স্ট্রাইকার এন্ডে ব্যাটসম্যান ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে গেলেই প্রযুক্তিগতভাবে সেটা রান-আউট বলে গন্য করা হবে। তবে এই নিয়ম কখনই একজন ক্রিকেটটারের স্পোর্টসম্যান স্পিরিট তুলে ধরে না।
২. তিন মিনিটের নিয়ম :
'তিন মিনিটের নিয়ম' অনুসারে একজন ব্যাটসম্যান ড্রেসিংরুম থেকে ক্রিজে আসার জন্য মাত্র ৩ মিনিট হাতে সময় পান। তারমধ্যে তিনি যদি উপস্থিত না হতে পারেন, সেক্ষেত্রে ওইsd ব্যাটসম্যানকে 'রিটায়ার্ড হার্ট' বলে গন্য করা হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়ম কিছুটা সহজও করা হয়। যদি বোলার হ্যাটট্রিক বল করার জন্য রেডি হন, সেক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় পাওয়া যেতে পারে। তবে ব্যাটসম্যানকে সেক্ষেত্রে যে নতুন সময় দেওয়া হবে, তার মধ্যেই ওই ব্যাটসম্যানকে উপস্থিত হতে হবে।
৩. দ্য ক্যাপ রুল :
এই নিয়ম অনুসারে, কোনও বল হাওয়া থেকে নামার সময় ফিল্ডারের টুপি কিংবা পোশাকে স্পর্শ করতে পারবে না। সোজা হাতের তালুর মধ্যেই জমা করতে হবে। ক্যাচ ধরার আগে হাতের তালু ছাড়া অন্য কোনও জায়গায় যদি বল লাগে, তাহলে সেটাকে মাটি বলে গন্য করে হবে এবং ক্যাচটা ধার্য করা হবে না। সঙ্গে ব্যাটসম্যানও কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারবেন, কারণ তাঁকে আউট দেওয়া হবে না।
৪. হাত দিয়ে বল আটকানো :
ক্রিকেটের আইনে ৩৭.১.১ ধারায় এই আউট সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘ব্যাটার যদি যে হাতে ব্যাট ধরা নেই সেই হাত দিয়ে বল ধরেন, তবে এই আউট হবেন। কিন্তু যদি চোটের হাত থেকে বাঁচতে বল ধরেন তবে তিনি আউট হবেন না।’ এই আইনটি এক সময় ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ আউট নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে ‘হ্যান্ডলড দ্য বল আউট’ বাদ দিয়ে এই আউটকে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউটের অর্ন্তভুক্ত করা হয়।
৫. অবজেক্ট হিটিং রুল :
এই নিয়ম অনুসারে, যদি কখনও বল স্টেডিয়ামের ছাদ, স্পাইডার ক্যাম কিংবা অন্য যে কোনও বস্তুতে আঘাত করে, তাহলে সেটা 'ডেড বল' হিসেবে বিবেচিত হবে। এমনকী, নিশ্চিত ক্যাচ হলেও সেটা গন্য করা হবে না।
৬. শ্যাডো রুল :
ক্রিকেট খেলার এই নিয়ম অনুসারে, যদি কেউ উইকেটের কাছাকাছি ফিল্ডিং করেন এবং তাঁর ছায়া যদি ক্রিজের উপর এসে পড়ে, তাহলে তাঁকে অবশ্যই সাবধান হতে হবে। কারণ, ব্যাটসম্যান শট না খেলা পর্যন্ত তিনি বিন্দুমাত্র নড়ানড়ি করতে পারবেন না। কারণ ক্রিজের উপর তাঁর ছায়া লড়লে ব্যাটসম্যানের শট খেলতে সমস্যা হতে পারে। অনেকেই হয়ত এই বিষয়টা জানতেন না।
৭. কল ব্যাক :
এই নিয়ম অনুসারে, কখনও আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর যদি বিপক্ষ দলের অধিনায়ক এই ব্যাপারে আলোচনা করতে পারেন। আম্পায়ারকে নিজের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানাতে পারেন। তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রেই এই নিয়ম লাগু করা যেতে পারে। যদি রান নেওয়ার সময়sd ফিল্ডারের সঙ্গে ব্যাটসম্য়ানের ধাক্কাধাক্কি হয় এবং ব্যাটসম্যান মাটিতে পড়ে যান সেক্ষেত্রে করা যেতে পারে।
৮. পেনাল্টি রুল :
এই নিয়ম অনুসারে, যদি উইকেটকিপার তাঁর হেলমেটটি মাঠের মধ্যেই রেখে দেন এবং ব্যাটসম্যানের শট সেই হেলমেটে গিয়ে লাগে , তাহলে আম্পায়ার ব্যাটিং দলকে পাঁচটি অতিরিক্ত পেনাল্টি রান দিয়ে দেন।
৯. লং স্টপ ফিল্ডিং পজিশন :
আজও অনেকের কাছে এই লংস্টপ ফিল্ডিং পজিশন অজানা রয়েছে। এই নিয়ম অনুসারে উইকেটকিপারের একেবারে পিছনে বাউন্ডারি লাইনে একজন ফিল্ডারকে দাঁড় করানো যেতে পারে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে টি-২০ ক্রিকেটের জন্মের পর এই নয়া নিয়মের জনপ্রিয়তা যথেষ্ট বেড়েছে। সম্প্রতি টি-২০ ক্রিকেটে অনেক অধিনায়কই এই ফাঁকা জায়গাটায় একজন করে ফিল্ডার রেখে দেন। তবে একদিনের এবং টেস্ট ক্রিকেটে এমন জায়গা কখনই ফিল্ডার রাখা হয় না। কারণ তাহলে মাঠের আরেকটা কোনও দিক ফাঁকা হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানদেরও রান তাড়া করতে সুবিধে হবে।
১০. হিট দ্যা বল টোয়াইস :
ডেলিভারি হওয়া কোন বল যদি ব্যাটসম্যান দুই বার আঘাত করেন তাহলে তিনি ‘হিট দ্য বল টোয়াইস’ আউট হবেন। প্রথমবার হিট করার পর দ্বিতীয়বার যদি ব্যাট, পা অথবা অন্যকোনো ভাবে বলটিকে আঘাত করা হয় তবুও এই আউট হবে।
Comments
Post a Comment