Skip to main content

প্রফেশনঃ মার্চেন্ডাইজিং


টেক্সটাইলের একজন স্টুডেন্ট হিসেবে টার্গেট জব হিসেবে আছে মার্চেন্ডাইজিং।

মার্চেন্ডাইজিং ই কেন?
এ প্রশ্নের উত্তর ছিল, এসি রুমে কাজ করা যায়, নিজের ডেস্ক থাকবে, বায়ারদের সাথে সরাসরি ডিল করা যাবে, ফাইভ স্টার হোটেলে আউটিং, ফরেন ট্যুর থাকবে আরো নানা রঙ্গিন সব কিচ্ছা কাহিনী।
কিন্তু মার্চেন্ডাইজিং প্রফেশন এতটা রঙিন স্বপ্নের মতো নয়। অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং পেশা হল মার্চেন্ডাইজিং। এই ব্লগে তার বিস্তারিত আলোচনা থাকছে -

মার্চেন্ডাইজারের কাজঃ

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, Jack-of-all-trades, master of none. এটা মার্চেন্ডাইজারের বেলায় অতি মাত্রায় প্রযোজ্য।এক্ষেত্রে গুগলিং করে মার্চেন্ডাইজারের নানাবিধ কাজের ফিরিস্তির বর্ণনা পেলেও মার্চেন্ডাইজারের মূল কাজ হলো একটা স্টাইল কিংবা গার্মেন্টসের অর্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে শিপমেন্ট পর্যন্ত যাবতীয় কাজ কো-অর্ডিনেট করা। সে অর্থে একজন মার্চেন্ডাইজারকে বায়ার, সাপ্লায়ার, ডিজাইন টিম, স্যাম্পল টিম, এক্সপার্ট ইমপোর্টসহ ফুল কমার্শিয়াল টিম, প্রকিউরমেন্ট টিম, প্রোডাকশন টিম, আই টিম, স্টোর ডিপার্টমেন্ট, ওয়াশিং ডিপার্টমেন্ট, টেস্টিং ল্যাব, ফিনিশিং টিম, কোয়ালিটি সহ সবার সাথে কো-অর্ডিনেট করা লাগে।

ব্যাপারটা একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জিং ঠিক অন্যদিকে আবার বৈচিত্রময়ও বটে। তবে দিনশেষে একটা চরম সত্য হচ্ছে, একটা স্টাইলের যে কোন প্রবলেমের দায়ভার শেষপর্যন্ত একজন মার্চেন্ডাইজারকেই নিতে হয়।কেননা একটা স্টাইল পরিচিত হয় একটা মার্চেন্ডাইজারের নামে। কোন সমস্যা হলে ফ্যাক্টরি বলবে মার্চেন্ডাইজার কে , ম্যানেজমেন্ট বলবে মার্চেন্ডাইজার কে। আর ঠিক একারণেই অন্যরা ওভারটাইম করে হলেও নিশ্চিন্তে বাড়ি যেতে পারলেও একজন মার্চেন্ডাইজার কখনও নিশ্চিন্তে বাড়ি যেতে পারে না। আর তাদের নির্দিষ্ট কোন ওয়ার্কিং আউয়ার নেই। হতে পারে সকালে এসে সন্ধ্যা ছয়টায় বের হবে অথবা এমনও হতে পারে সেটা রাত বারোটাও বেজে যেতে পারে। একেকটা স্টাইল তাই একেকজন মার্চেন্ডাইজারের কাছে সন্তানতুল্য। দায়িত্বটা খুব বেশি তাই না? তবে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সাথে কাজ করার জন্য কিংবা বিভিন্ন মানুষের সাথে কাজ করার সুযোগ থাকার কারণে ব্যাপারটা আসলে বৈচিত্রময়।

মার্চেন্ডাইজারের ক্লাসিফিকেশনঃ

এবার আসি মার্চেন্ডাইজারের রকমফের নিয়ে। মার্চেন্ডাইজারকে নানাভাবে ক্লাসিফাইড করা যায়। যদি প্রোডাক্টের বিবেচনায় আনি তবে মার্চেন্ডাইজার মুলত তিন প্রকার।
যথাঃ ওভেন মার্চেন্ডাইজার, নিট মার্চেন্ডাইজার এবং সোয়েটার মার্চেন্ডাইজার।
সাধারণত এক্ষেত্রে খুব বেশি মিক্স আপ হয় না। অর্থাৎ যে ওভেন মার্চেন্ডাইজার সে শুধু ওভেন আইটেম নিয়েই কাজ করে এরকম। তবে ক্ষেত্রবিশেষে ছোট কোম্পানিগুলো এবং বায়িং অফিসে একই মার্চেন্ডাইজারকে একইসাথে ভিন্ন ভিন্ন আইটেম নিয়ে কাজ করতে দেখা যায়।

যদি কাজের ধরণ নিয়ে বলি, তবে মার্চেন্ডাইজার দুই প্রকার।
যথাঃ ডেভেলপমেন্ট  মার্চেন্ডাইজার এবং প্রোডাকশন মার্চেন্ডাইজার।
এই ক্লাসিফিকেশন অবশ্য কোম্পানি টু কোম্পানি ভ্যারি করে। যেমন, অনেক কোম্পানিতে একজন মার্চেন্ডাইজার একটা অর্ডারের ডেভেলপমেন্ট স্টেজ থেকে শুরু করে পুরো এক্সিকিউশন একাই করে। আবার অনেক জায়গায় ডেভেলপমেন্ট মার্চেন্ডাইজার শুধু ডেভেলপমেন্ট পার্ট দেখে এবং প্রোডাকশন মার্চেন্ডাইজার পুরো এক্সিকিউশন পার্ট দেখে। এছাড়াও কোন কোন কোম্পানিতে ফ্যাক্টরি মার্চেন্ডাইজার দেখা যায়। এরা সাধারনত ফ্যাক্টরিতে বসে এবং এদের কাজ হচ্ছে হেড অফিস থেকে মার্চেন্ডাইজার ডেভেলপমেন্ট, এপ্রোভাল, বুকিং অকে করে দিলে ফ্যাক্টরির সাথে প্রোডাকশন কো-অর্ডিনেট করা।

ওয়ার্কপ্লেসের কথা বিবেচনা করলে মার্চেন্ডাইজার আবার দুই প্রকার।
যথাঃ ভেন্ডর মার্চেন্ডাইজার(ফ্যাক্টরি বা কোম্পানিতে যেই মার্চেন্ডাইজার থাকে) এবং বায়িং অফিস মার্চেন্ডাইজার।
বায়িং অফিসের মার্চেন্ডাইজিং একটা প্রেস্টিজিয়াস জব যদি সেটা মাল্টিন্যাশনাল বায়িং অফিস কিংবা ভালো কোন লিয়াজোঁ অফিসের হয়। ছোট খাটো বায়িং অফিসে দেখা যায় অর্ডার কম থাকলে কিংবা ছোট খাটো ভুলের কারণে জব চলে যায়।

মার্চেন্ডাইজারের যোগ্যতাঃ

একটা সময় ছিলো মার্চেন্ডাইজিং প্রফেশনে যে কেউ আসতে পারতেন কিন্তু এখন অধিকাংশ কোম্পানিগুলো টেক্সটাইল ব্যাকগ্রাউন্ড প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই বলে যে অন্য ব্যাকগ্রাউন্ড একেবারেই নিচ্ছে না তা নয়।  মার্চেন্ডাইজিং এ আসার জন্য দুইটা জিনিস থাকাটা অত্যাবশ্যক। একটি হচ্ছে ইংরেজীতে দক্ষতা এবং দ্বিতীয়টি হলো মাইক্রোসফট এক্সেলের কাজ জানাটা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যদিও শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজী থাকে কিন্তু অধিকাংশ ক্লাসই সহজে বোধগম্যতার কারনে বাংলায় নেওয়া হয়।
যার ফলে দেখা যায় Engish এ Communication এ আমাদের একটা জড়তা, আবার অনেকের ক্ষেত্রে বেশ কিছু দূর্বলতা থেকে যায়। আর এক্সেলের কোন কাজ না থাকার কারণে আমরা এটা সম্পর্কে একদমই ওয়াকিবহাল না। সেজন্য ফ্রেশার যারা মাইক্রোসফট এক্সেল পারেন না তারা এখনই শিখে নেন। ব্যাপারটা খুবই সহজ। Youtube এ বাংলায় এক্সেলের ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। সেখান থেকে মনোযোগ দিয়ে কয়েকদিন প্র্যাকটিস করলেই এক্সেলের বেসিকটুকু আয়ত্ব হয়ে যাবে l আর ইংরেজির ব্যাপারে নিজে থেকে ট্রাই করো নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার এবং অন্যান্য চর্চা চালিয়ে যাওয়ার।

মার্চেন্ডাইজারের কাজঃ

একজন মার্চেন্ডাইজারের কাজ এক কথায় বলে শেষ করা সম্ভব নয়। একটা অর্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে শিপমেন্ট পর্যন্ত পুরো ব্যাপারটা Handle করে একজন মার্চেন্ডাইজার। স্যাম্পলিং ডিপার্টমেন্ট শুধু স্যাম্পলিং দেখে, প্রোডাকশন টিম শুধু প্রোডাকশন ইস্যু দেখে, কোয়ালিটি টিম শুধু কোয়ালিটি ইস্যু দেখে, ওয়াশিং ডিপার্টমেন্ট শুধু ওয়াশিং ইস্যু দেখে, কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্ট শুধু কমার্শিয়াল ইস্যু দেখে, কিন্তু একজন মার্চেন্ডাইজারকে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের সাথে কাজ করা লাগে। আর এইজন্যই মার্চেন্ডাইজারের নির্দিষ্ট কোন Working Hour নেই, ছুটির কোন ঠিক ঠিকানা নেই। তারপরও আমাদের অনেকের ড্রিম জব হচ্ছে মার্চেন্ডাইজিং। কারন Diversity আর নিজেকে Prove করার অসাধারণ সব সুযোগের কারণে আমরা এই প্রফেশনে আসতে চাই। অন্য পর্বে মার্চেন্ডাইজারের সুবিধা সম্পর্কে জানবো।  আসুন আজকে কথা না বাড়িয়ে এক ঝলকে মার্চেন্ডাইজারের কাজ দেখে আসা যাক -

১. বায়ারের সাথে যোগাযোগ (Communication with buyer):
আপনার কোম্পানি যদি কোন Established Buyer এর সাথে আগে থেকে কাজ করে থাকে তবে সেক্ষেত্রে দেখা যাবে বিভিন্ন Season (বাংলাদেশী ঋতু না আবার), বায়ারের কান্ট্রি অনুযায়ী) এর শুরুতে তারা আপনাকে একটা Style এর Sketch,  Trim Sheet , Measurement Sheet mail এ পাঠাবে। আপনার প্রাথমিক কাজ হবে File গুলো পাওয়ার পর এর খুটিনাটি Analysis করে Buyer এর কাছ থেকে সব বিষয়ের Clarification নিয়ে নেওয়া যাতে করে আপনি তাকে পরবর্তীতে নিখুঁতভাবে Costing এবং তাদের Expectation অনুযায়ী Development Sample পাঠাতে পারেন।

২. সাপ্লায়ারদের সাথে যোগাযোগ (Communication with suppliers):
বায়ারের কাছ থেকে সব Clarifications নেওয়ার পর আপনার কাজ হবে Fabrics & Trims এর সাপ্লায়ারদের কাছ থেকে Trim sheet অনুযায়ী সবকিছুর Price জেনে নেওয়া এবং Development Sample বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় Sample yardage & trims collect করা। পাশাপাশি এসব কিছুর Production Lead Time জেনে নেওয়া।

৩. দাম প্রস্তুতকরণ এবং সময় অনুযায়ী কর্মতালিকা প্রনয়ণ (Costing & TNA):
সাপ্লায়ারদের কাছ থেকে Price & Production Lead Time জেনে নেওয়ার পর আপনার কাজ হবে সে অনুযায়ী Costing & TNA (Time & Action Calendar) ready করে বায়ারকে mail এ পাঠানো। এক্ষেত্রে আপনাকে Fabric & Trims এর Price এর পাশাপাশি  Fabric Consumption, CM (Cost of making) Cost, Wash Cost, Lab test Cost, Commercial Cost,  Shipping cost সহ আনুষঙ্গিক Cost Consider করা লাগবে।

৪. স্যাম্পল প্রস্তুতকরণ (Sample Development):
Costing ready করার পাশাপাশি আপনাকে বায়ারের কাছ থেকে প্রাপ্ত Sketch & Trim Sheet অনুযায়ী Sample বানাতে হবে। শুরুতে আপনাকে Proto/Development  Sample বানাতে হবে। এরপর বায়ারের Comments & Requirements অনুযায়ী Color Run/Wash Down সহ অন্যান্য Sample বানাতে এবং পাঠাতে হবে। অন্য পর্বে বিভিন্ন প্রকার Sample সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

৫. ফেব্রিক এন্ড ট্রিমস বুকিং (Fabric  & Trims Booking): 
Costing and Development Sample পাঠানোর পর যদি আপনার Quoted Costing/Price বায়ারের Target Price এর সাথে মিলে যায় এবং আপনার পাঠানো Development Sample এর Workmanship Satisfactory হয় সেক্ষেত্রে বায়ার আপনাকে Order Confirm করবে। Order Confirmation পাওয়ার পর আপনার প্রথম কাজ হবে ফেব্রিক বুকিং দেওয়া। তার পাশাপাশি আপনাকে বিভিন্ন ট্রিমস এর Approval নিয়ে অথবা ট্রিমশিট অনুযায়ী বিভিন্ন ট্রিমসের বুকিং দিতে হবে।

৬. স্যাম্পল সাবমিশন (Submission of Various Types of Samples):
Order Confirmation এর পর আপনাকে বিভিন্ন বায়ারের Requirements অনুযায়ী বিভিন্ন রকম স্যাম্পল যেমন Fit Sample/Wash Down Sample/Marketing Sample ইত্যাদি পাঠাতে হবে।

৭. সাপ্লাই চেইন এন্ড কমার্শিয়াল এক্টিভিটিজ ফলো আপ (Supply Chain and Commercial Activities Follow Up):
Merchandising is all about follow up. একজন ভালো মার্চেন্ডাইজার হতে হলে আপনাকে Follow Up এর পাশাপাশি একজন Good Planner হতে হবে এবং সবকিছু Manage করার মতো Capability থাকা লাগবে। যাই হোক অনেক কোম্পানিতে Supply Chain Department নামে আলাদা ডিপার্টমেন্ট থাকে, যারা মার্চেন্ডাইজার বুকিং দেওয়ার পর Commercial Activities & Material Inhouse এর কাজটা তারা করে। কিন্তু আপনি যদি হামীমের মতো ইডেন গার্ডেনে আসেন তাহলে এই গুরু দায়িত্বটা আপনাকে অর্থাৎ মার্চেন্ডাইজারকে করা লাগবে।
যদিও L/C draft, Shipping Docs Endorsement, ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ির কাজটা তারা করবে কিন্তু সাপ্লায়ারের কাছ থেকে Proforma Invoice নেওয়া, L/C Opening এর জন্য Commercial Dept. এ Submit করা, সাপ্লায়ারের কাছে L/C  Forward, Utilization Declaration (UD) র প্রয়োজনীয় Docs দেওয়া, Shipping/Airway docs নেওয়া, ক্ষেত্রবিশেষে ঠিকমতো Goods Ctg Sea Port/Dhaka Air Port/Benapole Port এ আসছে কিনা, Berthing/Unstuffing হয়েছে কিনা, C&F Agent এর কাছ থেকে আপনার কোম্পানির Agent Delivery Order নিয়েছে কিনা, Goods আপনার কোম্পানির কার্গোতে Load হয়েছে কিনা, Factory তে ঠিকমতো আসলো কিনা, আবার আসার পর সব Goods ঠিকমতো এসেছে কিনা এগুলা সব Follow Up আপনাকে করতে হবে।

৮. প্রোডাকশন ফলো আপ (Production Follow Up):
এতক্ষণ উপরে হালকার উপর ঝাপসা যা বললাম তা হচ্ছে Pre-Production Activities। এবার আসেন Production নিয়ে কিছু বলি।ধরেন বহু কাঠ খড় পুড়ায় বায়ারের হাতে পায়ে চুমা দিয়ে আপনি Production এর জন্য সব ধরনের Sample Approve করাইছেন সাথে সব Materials ঠিক সময়ে ফ্যাক্টরিতে এনে দিয়েছেন তাতেই কি আপনার কাজ শেষ। জ্বি না! খেল তো মাত্র শুরু। Production যদি ঠিকমতো না হয়, Shipment যদি সঠিক সংখ্যায় সঠিক সময়ে না যায় তবে আপনার সব Performance Zero। শুধু Zero না মস্ত বড় একটা Zero। তাই Production ঠিকমতো চালানোর জন্য PP meeting, Vessel Booking,  Daily Sewing ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, Washing Plant এ ঠিকমতো ওয়াশ হচ্ছে কিনা, আবার ওয়াশ থেকে এসে Finishing হচ্ছে কিনা, Garment Lab Test এর জন্য Submission,  কখন Final Inspection Offer করা হচ্ছে, তার আগে সবকিছু ঠিকমতো Ready হয়েছে কিনা এগুলা সব একজন আদর্শ মার্চেন্ডাইজারকে Follow Up করা লাগে।

এতক্ষণ উপরে যা বললাম তা হচ্ছে আপনাদের স্রেফ একটা ধারনা দেওয়ার জন্য। এর বাহিরে যে আরো কত কাজ থাকে তা বলার বাহিরে। এই সেক্টরে যে যেই ডিপার্টমেন্টে কাজ করে তাকে তার Specific কাজের জন্য Tension করা লাগে। কিন্তু একজন মার্চেন্ডাইজারকে সবকিছু নিয়ে Tension করা লাগে, সব Department এর সাথে কাজ করা লাগে। অন্যান্য জবে কিছু Limited কাজ করা লাগে কিন্তু মার্চেন্ডাইজিং এ আপনাকে সবকিছু মাথায় নিয়ে সারাদিন পার করা লাগে। এই Profession এতো এতো কাজ আর কাজের Variety থাকার কারণে এই Profession একই সাথে Challenging & Difficult।

যারা মার্চেন্ডাইজিং এ আসতে চান তারা আগে ভাবুন আপনি কি আসলেই এতো এতো কাজ করতে পারবেন,এতো এতো Pressure নিতে পারবেন ? যদি মনে হয় পারবেন তবেই আসুন। আমি কাউকে নিরুৎসাহিত করছি না। শুধু একটা বাস্তব প্রেক্ষাপট আপনাদের সামনে তুলে ধরছি মাত্র। তবে আরেকটা কথা বলে রাখছি এতো এতো Challenge নিয়েও যারা ভালো করছে তারাই কিন্তু আজ USA কাল UK কিংবা পরশু ইউরোপের কোন Country তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

মার্চেন্ডাইজিং এ যেই শব্দটা সবচেয়ে বেশিবার শুনবেন তা হচ্ছে Sample। কারণে অকারণে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় আপনার চারপাশে এই শব্দটাই সারাক্ষণ ঘুরবে আর তার সাথে সাথে আপনাকে ব্যতিব্যস্ত রাখবে। আর ট্রেইনিদের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যেই Responsibility বর্তায় তা হচ্ছে Sample Follow Up. আসুন জেনে নেওয়া যাক Sample কি আর Sample কত প্রকার হতে পারে।

খাটিঁ বাংলা ভাষায় স্যাম্পল মানে হচ্ছে নমুনা। অর্থাৎ বড় কোন অংশের Miniature Version অথবা কোন অংশবিশেষ হচ্ছে স্যাম্পল।স্যাম্পলের পুথিগত কোন সংজ্ঞা আমার জানা নেই। আমার মতে কোন একটা গার্মেন্টের সরাসরি বৃহৎ উৎপাদনে (Bulk Production) যাওয়ার আগে বিভিন্ন বায়ারের বিভিন্ন চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে যে সকল নমুনা গার্মেন্ট বায়ারের অনুমোদনের (Approval এর) জন্য বানানো এবং পাঠানো হয় তাকে স্যাম্পল বলে। বায়ার এমনি এমনি আপনাকে কোন একটা অর্ডার Confirm করবে না। Order Confirm হওয়ার আগে এবং পরে নির্দিষ্ট কয়েক প্রকার স্যাম্পল বায়ার কর্তৃক Approve হলেই আপনি Bulk Production করতে পারবেন এবং গার্মেন্টস Shipment করতে পারবেন। আগেই বলেছি বিভিন্ন বায়ারের Requirements অনুযায়ী স্যাম্পল অনেক প্রকার হতে পারে। তার মাঝ থেকে আসুন কিছু Common Sample সম্পর্কে জেনে নেই -

১. Proto/Development Sample :
 যে কোন নতুন Style এর Development আসলে বায়ার ঐ Style এর Sketch,  measurements sheet & Trim sheet /BOM(Bills of Material)  দেয়।সে  অনুযায়ী প্রথম  যেই স্যাম্পল পাঠানো হয় তাকে Proto/Development Sample বলে। এই স্যাম্পলের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে Garments এর Styling এবং তার পাশাপাশি যেই Vendor কে এই Development দেওয়া হলো তাদের Workmanship অর্থাৎ তারা আসলে কতটুকু ভালোভাবে গার্মেন্ট Sewing এবং Wash করতে পারে তা দেখা। এই স্যাম্পলের উপর ভিত্তি করে বায়ার Comment করে এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তীতে আবার স্যাম্পল পাঠাতে হয়।

২. Wash Down Sample:
এই স্যাম্পলের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে গার্মেন্টের ওয়াশ দেখা। বিশেহ করে ডেনিমের ক্ষেত্রে বায়ার একই রকম ফ্যাব্রিকের উপর বিভিন্ন রকম ওয়াশ দেখতে চায়।সেজন্যই এই স্যাম্পল বানানো হয়।

৩. Fit Sample:
নাম শুনেই অনেকটা বুঝা যাচ্ছে এই স্যাম্পলের কাজ কি হতে পারে । এই স্যাম্পলের কাজ হচ্ছে গার্মেন্টের Fit Approval নেওয়া অর্থাৎ গার্মেন্টটা ঠিকমতো ফিটিং অনুযায়ী বানানো হচ্ছে কিনা তা চেক করা। একটা স্টাইলে অনেকগুলো সাইজ থাকে। সব সাইজের জন্য ফিট স্যাম্পল বানাতে হয় না। এক্ষত্রে নির্দিষ্ট একটি কিংবা দুইটি সাইজের স্যাম্পল বানিয়ে বায়ারে কাছ থেকে এপ্রোভাল নেওয়া লাগে।আর ফিট স্যাম্পল এপ্রোভড হয়ে গেলে সে অনুযায়ী গ্রেডিং করে বাকি স্যাম্পলগুলোর ফিটিং ঠিক করা হয়।

৪. Advertising Sample:
সাধারনত একটা স্টাইল মার্কেটে আসার দুই-আড়াইমা আগে থেকেই বায়ার তাদের ওয়েবসাইটে এবং অনলাইন শপগুলোতে সে স্টাইলের promotion করে। এগুলো সাধারনত মডেলরা পরে Photoshoot করে।

৫. SMS Sample (Sales Man Sample):
এই স্যাম্পলগুলোও Promotional Purpose এ করা হয়। তবে এক্ষত্রে যা করা হয় তা করা হচ্ছে অর্ডার কনফার্ম করার আগে বিভিন্ন স্টাইলের স্যাম্পল বায়ার তাদের স্টোরগুলোতে প্রেজেন্ট করে কাস্টমারদের Feedback যাচাই করে এবং সে অনুযায়ী ভালো Feedback পাওয়া স্টাইলগুলোর অর্ডার কনফার্ম করে।

৬. PP(Pre-Production) Sample:
কোন একটা স্টাইলের প্রডাকশন শুরু হওয়ার আগে ফিট এপ্রোভড পাওয়া মেজারমেন্ট দিয়ে এপ্রোভাল পাওয়া এবং বুকিং দিয়ে আনানো ফেব্রিক এবং ট্রিমস দিয়ে স্যাম্পল Make করে Approve Wash Down স্যাম্পল অনুযায়ী ওয়াশ করে যে স্যাম্পল এপ্রোভালের জন্য বানানো হয় তাকে PP Sample বলে । এই স্যাম্পল বানানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা নিশ্চিত হওয়া যে Bulk production এ সবকিছু বায়ারের অনুযায়ী হবে।

৭. Size Set Sample:
এই স্যাম্পল সাধারনত PP Sample Approved হওয়ার পর এবং Bulk Cutting শুরু করার আগে বানানো হয়। যেহেতু শুধু নির্দিষ্ট দুই একটা সাইজের উপর করা হয় তাই সব সাইজের মেজারমেন্ট ঠিক আছে কিনা তা চেক করার জন্য সব সাইজের স্যাম্পল বানিয়ে মেজারমেন্ট এবং প্যাটার্ন Ajustment Check করা হয়।

৮. TOP(Top of The Production) Sample:
প্রডাকশন শুর করার পর সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা তা চেক করার জন্য বায়ার যেই স্যাম্পল চায় তাকে বলে।এটা সাধারণত শুরু হউয়ার কয়েক দিনের মাঝেই বায়ারের কাছে পাঠানো হয়।

৯. GPT (Garment Package Test) Sample:
যে কোন বায়ারেরই Order Shipment করার আগে International Third Party Testing Lab এ Bulk Production থেকে কিছু স্যাম্পল এনে আগে টেস্ট করে চেক করে নেওয়া হয় যে যেই Garment Shipment করা হবে তা আসলে Physical Strength, Chemical Behavior, Safety এবং যেই দেশে করা হবে সেদেশের ল এবং সেই বায়ারের বিভিন্ন প্যারামিটার অনুযায়ী ঠিক আছে কিনা। একে GPT Sample বলে।

এছাড়াও আরো বিভিন্ন বায়ারের Requirement অনুযায়ী বিভিন্ন নামে বিভিন্ন প্রকার স্যাম্পল আছে।

Comments

Popular Posts

টেক্সটাইল ডাইং কেমিক্যাল গুলির নাম এবং ব্যবহার

ডাইং ফিনিশিং এ ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোর নাম এবং ব্যবহার জেনে নিন : ১. সোডা  :  কালার ফিক্সং  করে কোভেলেন্ট বন্ড তৈরি করে। তাছাড়া PH কন্ট্রোল , ফেব্রিকের এবজরবেন্সি বাড়ানোর জন্য  ব্যবহার করা  হয়। ২. পার-অক্সাইড : ফেব্রিকের মধ্যে থাকা ন্যাচারাল গ্রে কালার রিমুভ করতে ব্যবহার করা হয়। ৩. স্টেবিলাইজার : পার-অক্সাডের রিয়েকশন স্টেবল করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যাবহার না করললে পার-অক্সাইড খুব দ্রুত ভেঙে পার-হাইড্রোক্সিল আয়ন গুলি শেষ করে ফেলবে, যা ব্লিচিং এর জন্য দায়ী। ৪. ডিটারজেন্ট :  ওয়েটিং অথবা ক্লিনিং এজেন্ট হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ৫. এন্টিক্রিজিং এজেন্ট:  নিটিং এর পর ও ওয়েট প্রসেসিং এর সময়  ফেব্রিকে ভাজ অথবা ক্রিজ পরে ফলে সেড আন-ইভেন আসতে পারে। ডাইং এর সময় তাই তা দূর করতে এক ধরনের ক্রিজ রিমুভার ব্যবহার করা হয় যেন ক্রিজ না পরে। এটি লুব্রিকেশন টাইপ এর কেমিক্যাল। ৬. সিকুস্টারিং এজেন্ট: পানির মধ্যে থাকা মেটাল আয়ন, হার্ডনেস রিমুভ করতে  ও পানিকে সফট করতে ব্যবহার করা হয়। ৭. ওয়েটিং এজেন্ট :  সারফেস টেনশন দূর করে ফেব্রিকের ভিজানোর ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি ওয়েটিং প্রপার

উপন্যাসের গঠন কৌশল

বিখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক E.M. Forster- এর মতে, কমপক্ষে ৫০ হাজার শব্দ দিয়ে উপন্যাস রচিত হওয়া উচিত। উপন্যাস সাহিত্যের এমন একটি মাধ্যম যেখানে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়ার অবকাশ থাকে। এখানে লেখক প্রাণখুলে তাঁর মতামত লিপিবদ্ধ করতে পারেন বা একেকটি চরিত্রকে প্রস্ফুটিত করতে পারেন সকল ধরনের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে। উপন্যাসকে এক সুবিশাল ক্যানভাস হিসেবে ধরা যায়, লেখক তাঁর পরিকল্পনা মাফিক একেকটি অধ্যায়কে জায়গা করে দেন সেখানে। স্থান-কালের যথার্থ উল্লেখ, বাস্তবতার প্রতি তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখা, মানুষের হৃদয়ের গভীর তলদেশ স্পর্শ করার ক্ষমতা—ইত্যাদি দরকার একটি সার্থক উপন্যাসের জন্য। উপন্যাস বিশ্লেষকগণ একটি সার্থক উপন্যাসের গঠন কৌশল নিয়ে ছয়টি রীতির কথা বলেছেন। প্লট বা আখ্যান সম্পাদনাঃ উপন্যাসের ভিত্তি একটি দীর্ঘ কাহিনি। যেখানে মানব-মানবীর তথা ব্যক্তির সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ, ঘৃণা-ভালোবাসা ইত্যাদি ঘটনা প্রাধান্য লাভ করে। উপন্যাসের প্লট বা আখ্যান হয় সুপরিকল্পিত ও সুবিন্যস্ত। প্লটের মধ্যে ঘটনা ও চরিত্রের ক্রিয়াকাণ্ডকে এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয় যাতে তা বাস্তব জীবনকে প্র

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়া ও তাসবীহ সমূহ

জায়নামাযে দাঁড়ানোর দোয়া اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ حَنِيْفًا وَّمَا اٰنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ- উচ্চারণ-ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজ্হিয়া লিল্লাযী ফাতারাস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানীফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন। ছানা سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالٰى جَدُّكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ- উচ্চারণ- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বি-হামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা। রুকূর তাসবীহ سُبْحَانَ رَبِّىَ الْعَظِيْمِ উচ্চারণ- সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম। অর্থাৎ- আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করতছি। তাসমীহ سَمِعَ اللّٰهُ لِمَنْ حَمِدَهْ উচ্চারণ- সামি আল্লাহুলিমান হামিদাহ। অর্থাৎ- যে তাহার (আল্লাহর) প্রশংসা করে, আল্লাহ তাহা শুনেন। তাহমীদ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ উচ্চারণ- রাব্বানা লাকাল হামদ। অর্থাৎ- হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি প্রশংসিত। সিজদার তাসবীহ سُبْحَانَ رَبِّىَ الْاَعْلٰى উচ্চারণ- সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা। অর্থাৎ- আমার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করতেছি। আত্তাহিয়্যাতু اَلتَّحِيّ