যে গাছটির বনসাই তৈরি করবেন, সেটার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ভালোভাবে জেনে নিন। নির্বাচিত গাছের বিচি থেকে চারা তৈরি করে নিতে পারেন অথবা নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে তা থেকে বনসাই তৈরি করতে পারেন। বনসাইয়ের মাটি তৈরির ক্ষেত্রে দোআঁঁশ বা পলিমাটির সঙ্গে পরিমিত জৈব সার ব্যবহার করুন। পানি নিষ্কাশন ও গাছের বৃদ্ধি রোধে বিশেষভাবে তৈরি টবেই বনসাইয়ের চারা রোপণ করতে হবে। এই টবের নিচের দিকে পানি নিষ্কাশনের এবং কিনারা বরাবর দুই বা ততোধিক ছিদ্র থাকে, যা তার পেঁচিয়ে গাছের বৃদ্ধি কমিয়ে রাখে। কিছুদিন বৃদ্ধির পর গাছটির
জন্য উপযুক্ত আকৃতি নির্ধারণ করে ডালপালায় তার পেঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি নিয়মিত অবাঞ্ছিত ডাল-পাতা ছাঁটাই করতে থাকুন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হবে আপনার বনসাইটি। বর্তমানে বিভিন্ন বনসাই সোসাইটি, ব্যক্তিগত সংগ্রহকারী এমনকি নার্সারিতেও কিনতে পাওয়া যায় এটি। তবে বনসাইয়ের দরদাম নির্ভর করে গাছের বয়স ও গঠনের ওপর। সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকায় বনসাই ক্রয় করতে পারেন। তবে মোটামুটি ভালোমানের
একটি বনসাইয়ের জন্য ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা বাজেট রাখতে পারেন। বিভিন্ন বনসাই প্রদর্শনী, কৃষিমেলা এমনকি বনসাই
প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকেও আপনি বনসাই সংগ্রহ করতে পারেন।
পরিচর্যাঃ গাছকে নিয়মিত খাবার দিন। যেমন—কালো মাটি, বালু বা ইটের চূর্ণ, সরিষা বা নীলের খোসা ইত্যাদি।
১) বনসাই অতিরিক্ত পানিবদ্ধতা এবং রোদ কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। তাই এ বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
২) বনসাই ধুলো-ময়লামুক্ত রাখতে পানি দিয়ে পাতা ও ডাল মুছে দিন।
৩) টবের মাটিতে পোকামাকড় কিংবা ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব হলে সঠিক মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ করুন।
৪) এমন স্থানে রাখুন, যেখানে আলো-বাতাস চলাচল করে কিন্তু লোকজনের যাওয়া-আসা কম।
৫) নির্ধারিত আকৃতি ঠিক রাখতে নির্ধারিত ডালপালা বাদে ছাঁটাই করুন।
৬) বেশি ব্যস্ত থাকলে সঠিক মাত্রায় তরল সার প্রয়োগ করতে পারেন।
৭) অবশ্যই প্রতি এক বছর অন্তর টবের মাটি পরিবর্তন করুন।
৮) গাছের ছাঁটাইসহ অন্যান্য কাজে বনসাই পরিচর্যার জন্য নির্ধারিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন।
খেয়াল রাখবেনঃ
১) বনসাইটির রুট বেইস ভালো কি না।
২) প্রাকৃতিকভাবেই গাছটি সৌন্দর্য প্রকাশ করছে কি না।
৩) গাছের বাকলে বয়সের ছাপ স্পষ্ট কি না। ভালো বনসাইয়ের মূল কান্ড মসৃণ ও দাগমুক্ত হয়।
৪) বনসাইটি আদি বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য বহন করে কি না।
Comments
Post a Comment