Skip to main content

দুঃস্বপ্ন ও গার্লফ্রেন্ড

- বাবা বাবা দেখো, ছেলেটা আমাকে চোখ মারছে।
-কোন ছেলে মা? কোথায় সেই হারামজাদা?"

মেয়েটা ওর হাতের আঙ্গুল আমার দিকে করার সাথে সাথে আমার কলিজা শুকিয়ে গেলো। 
দেখি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওর বাবা আমার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বডি দেখলে মনে হয় ছোটখাটো একটা দানব।

প্রেমিকার সাথে দেখা করবো বলে মার্কেটে দাঁড়িয়ে আছি। ঐ ৪-৫ বছরের পিচ্চি মেয়েটাই আমাকে প্রথমে চোখ মেরেছে। প্রথম কয়েকবার পিচ্চিটা মারার পর আমিও দুষ্টামি করে একটা চোখ মেরেছি দেখে সাথে সাথে ওর আব্বুর কাছে বিচার দিয়েছে।

মেয়েটার বাবাকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে দিলাম এক দৌড়। দেখি আমার পিছু পিছু মেয়েটার বাবাও ছুটে আসছে। এটা দেখার পর আরো জোরে দৌড় দিলাম। কিন্তু যতোই দৌড়াতে যাই ততোই প্যান্ট নিচের দিকে নেমে যায়। দুই হাত দিয়ে কোমরের দুই পাশের প্যান্ট ধরে আছি আর মার্কেটের মধ্যে দিয়ে দৌড়াচ্ছি। মনে মনে নিজের বাপের উপর রেগে গেলাম। প্রত্যেকবার প্যান্ট কিনে দেওয়ার সময় এমন ঢিলেঢালা প্যান্ট কিনে দেয়। যার জন্য আমার এই দশা। এখন দৌড়াতে গিয়ে যদি প্যান্ট খুলে যায়, তাহলে ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে। হঠাৎ বাসার লুঙ্গিটাকে খুব মিস করতে লাগলাম। লুঙ্গি পরে দৌড়ানোর মজাই আলাদা। বাতাসের প্রবাহ খুব কাজে দেয়।

হঠাৎ সামনে প্রেমিকাকে দেখে কলিজা আরো শুকিয়ে গেলো। আমাকে দৌড়াতে দেখে ও টাইটানিক সিনেমার মতন দুই হাত মেলে দাঁড়িয়ে রইলো। আমার প্রেমিকা অভিনয় শিখবে বলে কয়েকদিন আগে একটা কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছে। কোচিং করার পর থেকে ও আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলে যে বুঝতেই পারিনা ও আমার প্রেমিকা না ছবির নায়িকা। ওর কাছে পৌঁছেই বললাম,
-চলো এখন থেকে পালাই নইলে মাইর একটাও মাটিতে পরবে না।

আমার কথা শুনে প্রেমিকা বলে উঠলো,
-না না না! এ হতে পারে না। তোমার সাথে প্রেম করবো বলে আমি সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে তোমার কাছে ছুটে এসেছি। আর তুমি কিনা আমাকে বলছ এখান থেকে পালিয়ে যেতে? ঐ শয়তান রাজা আমাদের কিচ্ছু করতে পারবে না। আমাদের ভালবাসার কাছে ওর অশুভ শক্তি পরাজিত হবে। আমি তোমার সাথে এই বিশাল রাজ্যে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে চাই প্রিয় সোলেমান।
প্রেমিকার অভিনয় দেখে আমার বুঝতে আর বাকি রইলো না। পৃথিবী উল্টে গেলেও মাইরের আজ মিস নাই।

এর মধ্যে দেখি মেয়েটার বাবা প্রায় কাছে চলে এসেছে। প্রেমিকাকে বললাম,
-তুমি আমার সাথে যাবে কিনা।
প্রেমিকা দেখি আবার অভিনয় করে বলে উঠলো,
-জীবন যদি চলে যায় যাক। তবুও আমি এই রাজ্য ছেড়ে কোথাও যাবো না প্রিয়।
আমি বললাম,
-থাকো তুমি তোমার রাজ্য নিয়ে আমি পালালাম। নিজে বাঁচলে বাপের নাম।

যেই দৌড় দিতে যাবো ঠিক তখনি প্রেমিকার আমার শার্ট টেনে ধরে বলল,
-যেতে চাইলে যেতে দিবো না। না না যেতে দিবো না। তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিব ছেড়ে দিবো না। প্রেমিকাকে বললাম,
-আল্লাহর দোহাই লাগে আমাকে ছেড়ে দেও। প্রেমিকা আরো শক্ত করে ধরে বলল,
-না তোমাকে এই সুন্দর রাজপ্রসাদ ছেড়ে যেতে দিবো না।

এরমধ্যে পিচ্চি মেয়েটার বাবা এসে আমাকে ধরে ফেললো। কোনো কথা না বলে নাক বরাবর দিলো এক ঘুষি। চোখের সামনে কয়েকটা জোনাকি পোকা দেখতে দেখতে ফ্লোরে পড়ে গেলাম। না, জ্ঞান হারাইনি তখনো। কিন্তু প্রেমিকা যখন লোকটাকে বলল,
-শয়তান, ছেড়ে দে আমার সোলেমান কে, তুই আমার দেহ পাবি কিন্তু মন পাবি না।
এই কথা শোনার পর জ্ঞান হারালাম।

© মোঃ শামীম শিহাব

Comments

Popular Posts

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়া ও তাসবীহ সমূহ

জায়নামাযে দাঁড়ানোর দোয়া اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ حَنِيْفًا وَّمَا اٰنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ- উচ্চারণ-ইন্নি ওয়াজ্জা...

টেক্সটাইল ডাইং কেমিক্যাল গুলির নাম এবং ব্যবহার

ডাইং ফিনিশিং এ ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোর নাম এবং ব্যবহার জেনে নিন : ১. সোডা  :  কালার ফিক্সং  করে কোভেলেন্ট বন্ড তৈরি করে। তাছাড়া PH কন্ট্রোল , ফেব্রিকের এবজরবেন্সি বাড়ানোর জ...

হুমায়ুন আহমেদ - এর উক্তি সমূহ

১. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে ভালবাসা। ২. ভালোবাসা ও ঘৃনা দুটোই মানুষের চোখে লিখা থাকে। ৩. একজন সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে দেখা ও তাকে অসুন্দর হিসেবে আবিষ্কার করার মধ্যবর্তী স...