Skip to main content

ভ্যাম্পায়ার শিকারি (পরিচ্ছেদ - ০৭)

পানিতে পড়ার সাথে সাথে নীলের কাধে গুলি লাগে। সামনে তাকিয়ে দেখি আমাদের নতুন স্যার আর ভ্যাম্পায়ার শিকারি।
- নীল, আপনি নীলকে গুলি করলেন কেনো?
- গুলি না করলে তোমাকে মেরে ফেলত।
- না, মেরে ফেলতো না। আমি ওকে পানিতে ফেলে দেওয়ার পর ও শান্ত হয়ে গিয়েছিলো। তারপর ও কেনো গুলি চালালেন।
- এই মেয়ে আমি কে জানো?
- আপনি একটা গাধা লোক। যে খারাপ ভ্যাম্পায়ারদের পেছনে না গিয়ে নীলকে আহত করছেন। নীল তুমি ঠিক আছো?
- আমি তোমার নীলের গুরু। নীল আমার কাছেই ভ্যাম্পায়ার শিকারের ট্রেনিং নিয়েছে।
আমাদের কথা আর গুলির আওয়াজে আব্বু ঘটনার যায়গায় চলে আসে।
- আরে এসব কি হচ্ছে? নওরিন, নীলকে নিয়ে উঠে আসো পানির ভেতর থেকে। আর আমার কলেজের ভেতরে এসব গোলাগুলি হবে না। এটা কলেজ যুদ্ধের ময়দান না। প্রতিশোধ নিতে হয় কলেজের বাইরে গিয়ে নাও। নীল আমার কলেজের স্টুডেন্ট। তার নিরাপত্তা আমার দায়িত্ব।
- খুকি সামান্য গুলি লেগেছে। তোমার নীলের কিছু হবে না। এখন তো আবার ও ভ্যাম্পায়ার। ভ্যাম্পায়ারদের জখম তাড়াতাড়ি সারে।
- আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে চায় না।
আমি নীলকে নিয়ে উঠে যায়।
.
নীলকে রুমে নিয়ে গিয়ে আমি ওর গুলির জায়গাটায় ব্যান্ডেজ করতে লাগলাম।
- নীল, তুমি ঠিক আছো?
- আমার নিজের উপর খুব রাগ লাগছে।
আমি নীলের গালে হাত দিলাম।
- নীল কিছু হয় নি। আমার তোমার ওপর কোন রাগ নেই।
- যখন আমি তোমার রক্ত খায় তখন তোমার স্মৃতি গুলো দেখিতে পায়।
- মানে?
- তোমার রক্ত নেশার মতো।
- আমার স্মৃতি মানে?
- ছোট বেলায় তুমি আর খালিদ কত ক্লোজ ছিলা, তোমাকে খালিদ বাঁচিয়েছিল....
- এসব তুমি কি করে জানো?
- যখন তোমার রক্ত খায় তখন তোমার স্মৃতি আমার মনে ভাসে। যেনো ছোটবেলার আটকানো স্মৃতিগুলো আমার ভেতর মুক্তি পায়।
- এমন করা ঠিক না। এখন আমার তোমার ওপর খুব রাগ লাগছে যে তুমি আমার অজান্তে আমার ব্যপারে সব জেনে যাচ্ছ। ডায়রি পড়ার মতো করে।
-.......
- অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়।
.
রাতে আমি ঠিক মতো ঘুমাতে পারি নি। সকালে আবার কলেজের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করি। এই প্রথম কলেজ ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করতে আমার নিজের ওপর রাগ হলো। একটা চিঠি পেয়ে আমার মাথায় রাগ উঠে গেলো। আমি আব্বুর অফিসে সজা চলে যায়।
- আব্বু এইসব কি?
- কি?
- তুমি নীলকে টিসি দিচ্ছ কেনো?
- কারণ তুমি নিজের যত্ম নিতে পারো না।
-......
- লকেট পরে থাকতে বলেছিলাম। এখন নীলকে অন্য কলেজে পাঠিয়ে দিতেই হবে।
- এসব বুদ্ধি তোমার মাথায় কে দিলো?
- আ....কেউ না।
- মিথ্যা কথা। আমি জানি এই বুদ্ধি খালিদ দিয়েছে।
-......
- ঠিক আছে। খালিদকে রাজি করাতে পারলে তুমি নীলকে টিসি দিবা না।
-.....
- হুম, কথা দিলে তো।
- না....শোনো....
আব্বুর কথা শেষ না হতেই আমি ভ্যাম্পায়ারের হোস্টেলে চলে যায়। ভ্যাম্পায়ারের ক্লাস রাতে নেওয়া হয়। আমি ভেতরে যাবোই এমন সময় সৌরভ আমার পথ আটকায়।
- নওরিন, না।
- কেনো?
- খালিদের কাছে যেও না।
- অন্য সময় তো নিজে থেকে আমাকে খালিদের কাছে পাঠাতে।
- আমি জানি তোমার খুব রাগ হয়েছে।
- নীলকে কেনো টিসি দেওয়া হচ্ছে?
- খালিদ আর কি করবে? তোমাকে নীলের কাছে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যেতে দেখবে।
- নীল আমার ফ্রেন্ড।
- আর খালিদ?
- আমার জীবনে নাক গলাতে নিষেধ করেছিলাম খালিদকে।
- নীল নিজেই টিসি চেয়েছে।
- কি?
- হ্যা। যা বলার ওকে গিয়ে বলো।
.
সৌরভের কথা শুনে আমি আবার নীলের কাছে যায় ওর রুমে।
- নীল তুমি টিসি নিচ্ছ কেনো?
- আমি তোমার আশে পাশে থাকলে নিজেকে ঠেকাতে পারি না।
- তাই বলে তুমি চলে যাচ্ছ কেনো?
- তোমাকে মেরে ফেলার চেয়ে নিজেকে মেরে ফেলা ভালো।
কথা শেষ করে নীল তার পকেট থেকে ভ্যাম্পায়ার মারার রিভলভার বের করে নিজের মাথায় ধরল।
- নীল, না। প্লিজ।
আমি নীলকে ঠেকায়। তারপর ওকে জড়িয়ে ধরি।
- প্লিজ নীল। আমাকে একা ফেলে কোথাও যেও না। তুমি আমার ক্ষতি করবা না। আমি জানি। আমি সব সময় তোমাকে মনে করিয়ে দেবো যাতে তোমার আমার প্রতি রক্তের পিপাসা কন্ট্রোলে থাকে।
নীল আমাকেও জড়িয়ে ধরল। নিজের চোখের পানি মুছে আমি হাসি মুখে রুম থেকে চলে যায়।
.
রুমে গিয়ে তমার মুখোমুখি হলাম।
- এই আজ কাল নীলের কি হয়েছে বল তো?
- কেনো?
- কলেজ ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করতে দেখি না তো।
- তুই গিয়ে দেখা করে আয়। রুমে আছে হয়ত।
- তুই কি করে জানলি রুমে আছে?
- না, আমার মনে হলো।
- ও আচ্ছা। চকলেট কেক বানিয়ে নিয়ে যাবো নাকি আবার? কি বলিস?
- নীলের চকলেট পছন্দ না।
- তুই কি করে জানলি?
- ইয়ে মানে আমরা তো ছোট বেলার থেকে একসাথে পড়েছি তাই।
- ও, তোর কি মনে হয়? নীল আমাকে পছন্দ করবে?
- এইটা তুই নিজে ওকে জিজ্ঞেস কর।
- আর তোর ঘাড়ে অমন ব্যান্ডেজ করা কেনো রে?
- ইয়ে, তুই তো জানিস আমি কত কেয়ারলেস।
- ও, আচ্ছা।
.
তমাকে আসল কথা বলার সাহস হলো না। যদিও সে আমার ভালো ফ্রেন্ড। বিকালের দিকে আমি, আব্বু, খালিদ আর সেই পচা টিচার যে গুলি করেছিলো একসাথে নীলকে নিয়ে মিটিং করি।
- হিমার সেফটি আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
- আমার ব্যাপারে তোমাকে মাথা ঘামাতে হবে না।
নতুন টিচারটা বলে উঠলো,
- খালিদকে আমি যতদূর চিনি তার তো এতোদিনে নীলকে মেরে ফেলার কথা। মারো নি কেনো?
- কি বলছেন এসব?
- আমার ভয় ছিলো, নীলকে মেরে ফেললে হিমা আমাকে ঘৃণা করতে শুরু করবে।
রুমের ভেতর সবাই নিরব হয়ে গেলো। তমা ছুটতে ছুটতে রুমে এসে বলল,
- নওরিন, নীল কলেজ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
- কি!!!
আমি আর তমা তখন কলেজের মেন গেটের কাছে ছুটতে ছুটতে যায়। নীলকে পেছন দিক থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। নীলের ব্যাগটা আচমকায় পড়ে যায়।
- নীল, এসব কি? আজ সকালেই তো তোমাকে বোঝালাম।
- আমাকে একলা ছেড়ে দাও নওরিন।
- না, নীল। তুমি চলে গেলে আমি একা হয়ে যাবো। তুমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। প্লিজ যেও না।
- হ্যা, তোমার বেস্ট ফেন্ড। তাই তোমার সেফটি বেশি জরুরি। আমি আশেপাশে থাকলে তুমি সেফ থাকবা না।
- নীল....না।
নীলের সাথে কথা বলতে বলতে আমার মাথা ঘুরে যায় আর আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।

চলবে......
লেখাঃ মোঃ শামীম শিহাব

Comments

Popular Posts

টেক্সটাইল ডাইং কেমিক্যাল গুলির নাম এবং ব্যবহার

ডাইং ফিনিশিং এ ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোর নাম এবং ব্যবহার জেনে নিন : ১. সোডা  :  কালার ফিক্সং  করে কোভেলেন্ট বন্ড তৈরি করে। তাছাড়া PH কন্ট্রোল , ফেব্রিকের এবজরবেন্সি বাড়ানোর জ...

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়া ও তাসবীহ সমূহ

জায়নামাযে দাঁড়ানোর দোয়া اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ حَنِيْفًا وَّمَا اٰنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ- উচ্চারণ-ইন্নি ওয়াজ্জা...

হুমায়ুন আহমেদ - এর উক্তি সমূহ

১. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে ভালবাসা। ২. ভালোবাসা ও ঘৃনা দুটোই মানুষের চোখে লিখা থাকে। ৩. একজন সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে দেখা ও তাকে অসুন্দর হিসেবে আবিষ্কার করার মধ্যবর্তী স...