Skip to main content

ডায়েরি (পরিচ্ছেদ - ০৭)

এবার বেশ ভয়ে ভয়েই ডায়েরিটা হাতে নিলাম। দেখলাম, গতরাতে যেখানে ডায়েরিটা শেষ করেছিলাম ঠিক তার পরের অংশের পৃষ্ঠা বেরিয়ে রয়েছে। আবার আমি ডায়েরিটা পড়া শুরু করলাম।

"দরজার বাহিরে কেউ নেই। আসিফ আরও কৌতুহল নিয়ে ঘরের বাহিরে গেল। কিন্তু সে আশেপাশে খুজেও কোন বৃদ্ধা বা কোন মানুষকেও খুজে পেলো না। আমি আর আসিফ বেশ ভয় পেয়ে যাই। এত রাতে তাহলে কান্নার আওয়াজ আসছিলো কোথা থেকে? আমরা কিছু বুঝতে না পেরে দরজা আটকে আবার শুইয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর আবার আমরা সেই বৃদ্ধার কান্নার শব্দ শুনতে পাই। আসিফ আবার দরজা খুলে দেখতে যায় যে কে কান্না করছে। কিন্তু দরজা খোলার পর সেই একই ঘটনা ঘটে। আসিফ বাহিরে কাউকেই দেখতে পেলো না। আবার দরজা আটকে আমরা শুয়ে পড়ি।
এরপর আরো কয়েকবার আমরা বাহিরে বৃদ্ধার কান্নার শব্দ শুনতে পাই। কিন্তু দরজা খুললে আর কাউকেই দেখা যায় না। এরপর বিরক্ত হয়ে কান্নার শব্দ শোনার পরেও আমরা আর দরজা খুলি না। আমরা চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ি। এরপরের দিনটা আমাদের ভালো ভাবেই কাটে। কিন্তু রাতের বেলা দরজার বাহিরে আবার সেই কান্নার শব্দ শুনতে পাই। কিন্তু আজ একটু ভিন্ন রকম কান্নার শব্দ পেলাম। একটা বাচ্চা মেয়ের কান্নার শব্দ!
কিন্তু তাদের কান্নার শব্দ শুধু ঘরের ভেতর থেকেই শুনা যায়। ঘরের বাহিরে গেলে আর কাউকে দেখা যায় না। এরপর আমি একটু জানালার কাছে গেলাম। গিয়ে দেখলাম জানালার বাহিরে সেই বৃদ্ধাটি আজো জানালা দিয়ে ভয়ংকর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আজ তার পাশে আরেকটা বাচ্চা মেয়েও দাড়িয়ে ছিলো। আমি অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু তাদের দিক থেকে চোখ সড়ালাম না। এই ভেবে যে চোখ সড়ালে যদি আবার এরা অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপরেই আসিফকে হাতের ইশারা করে জানালার দিকে ডাকলাম। আসিফ দ্রুত এসে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালো। আজ আসিফ জানালার বাহিরে সেই বৃদ্ধা আর একটা বাচ্চা মেয়েকে দেখতে পেলো। আসিফ বেশ সাহসি ছেলে ছিলো। তাই সে দ্রুত দরজা খুলে। দৌড়ে বাহিরে গেলো বৃদ্ধাটাকে ধরতে। আমিও অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ঘরের বাহিরে গেলাম না। কারণ রাত্রি তাহলে একা ঘরে ঘুমিয়ে থাকবে। আর ও ঘুম থেকে উঠে যদি দেখে যে সে একা রয়েছে তাহলে ভয় পেয়ে যাবে। তাই আমি বাহিরে না গিয়ে দরজাটা ভেতর থেকে আটকে দিলাম আর জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম আসিফ কোথায়! কিন্তু দেখলাম, আসিফ, সেই বৃদ্ধা বা বাচ্চা মেয়ে কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। আমি অনেকক্ষণ আসিফের জন্য অপেক্ষা করলাম কিন্তু সে আসল না। দীর্ঘ এক ঘন্টা যখন কেটে যায় তখন আমার ভয় আরো বেড়ে যায়। আসিফ এখনো আসছে না কেনো? তার কি কোন বিপদ হলো!
একটু পরেই হঠাৎ দরজায় কারো আসার শব্দ পেলাম। ঠকঠক করে দরজা কেউ বাহির থেকে ধাক্কাচ্ছিলো। প্রথমে ভাবলাম হয়তো আসিফ এসেছে। পরে ভাবলাম। যদি অন্য কেউ এসে থাকে তাহলে কি করবো! ঘরে এখন শুধু আমি আর রাত্রিই রয়েছি। ভয়ে ভয়ে দরজার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলাম,
-বাহিরে কে? কে এসেছেন? আসিফ তুমি?

কিন্তু দরজার ওপাশ থেকে কোন উত্তরই আসলো না। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। বুঝতে পারছিলাম ওপাশ থেকে কেউ দরজা দ্রুত ধাক্কাচ্ছে খোলার জন্য। কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না কেনো!! তাহলে কি অন্য কেউ এসেছে!! নাকি আসিফেরই কিছু হয়েছে যার জন্য সে কথা বলতে পারছে না। আমি পুরোই দ্বন্দ্ব পরে গেলাম। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম যে, যা হওয়ার হবে। আমাকে দরজাটা খুলতেই হবে। এরপর সাহস করে দরজাটা খুলেই ফেললাম। দরজা খুলে যাকে দেখলাম তাতে বেশ রেগে গেলাম।
আসিফ এসেছে! সে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে হাসতে প্রশ্ন করলো,
-কি হলো! ভয় পেয়ে গিয়েছিলে নাকি? ভুত এসেছে ভেবেছিলে?

আমি আসিফের এই রসিকতা দেখে বেশ রেগে গেলাম। এরপর হঠাৎ আমার চোখ গেলো আসিফের হাতের উপর। আসিফের হাতে যা দেখলাম আমি ভয়ে পুরো আৎকে উঠলাম। আসিফের হাতে একটা সাদা কাপড়। কাপড়টা দেখে আমার চিন্তে বাকি রইলো না যে।
আরে! এটাতো সেই কাপড়টা যেটা কিছুক্ষন আগে সেই বৃদ্ধার পরনে দেখেছিলাম। কিন্তু এটা আসিফ পেলো কোথায়?
আমি অবাক হয়ে আসিফের কাছে জানতে চাই যে, এটা আসিফ কোথা থেকে পেলো। আসিফ হাসতে হাসতে উত্তর দিলো,
-আরে এটা নকল ভূতের জামা। আমি তোমার ইশারার পর সেই বৃদ্ধা ভূতটাকে ধরতে ঘরের বাহিরে গেলাম। আমাকে দেখেই বৃদ্ধাটা বাচ্চাটাকে নিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। কিছুদুর যাওয়ার পর হঠাৎ তার কাপড়টা শরীর থেকে খুলে যায়। আমি দেখলাম। আরে! এটাতো কোন বৃদ্ধা না। একটা পুরুষ। সাদা শাড়ী পড়ে ভূত সেজে আমাদের ভয় দেখাতে এখানে এসেছিলো। আমি লোকটাকে ধরতে যেই পিছু ছুটলাম, হঠাৎ একটা গাড়ি এসে লোকটাকে নিয়ে চলে গেলো। ভূতেরা কি আবার গাড়ি ব্যবহার করে নাকি? হাহাহা। নিশ্চই কেউ আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তাই এসব করেছে। (আসিফ)
-কিন্তু আমাদের ভয় দেখিয়ে কার কি লাভ হবে? আমাদের তো আর কারও সাথে এখানে শত্রুতা নেই।
-এটার উত্তরতো আমার কাছেও নেই। তাই একটু চিন্তায় আছি। কারা ছিল এই লোকগুলো? আর আমাদের ভয় দেখাতেই বা এতোরাতে এখানে এসেছিল কেন?
-আচ্ছা বৃদ্ধাটা যদি ভূতই না হয়, তাহলে আমরা যে রাতে কান্নার শব্দ পাই এটা কার? আমরাতো তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আর কাউকে দেখতে পাইনা।
-এটার উত্তর কাল সকালেই আমরা পাবো। এখন তুমি ঘুমাও মিশি। একদম চিন্তা করো না বা ভয় পেয়ো না। সব ঠিক হয়ে যাবে।

চলবে....
লেখাঃ মোঃ শামীম শিহাব

Comments

Popular Posts

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়া ও তাসবীহ সমূহ

জায়নামাযে দাঁড়ানোর দোয়া اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ حَنِيْفًا وَّمَا اٰنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ- উচ্চারণ-ইন্নি ওয়াজ্জা...

টেক্সটাইল ডাইং কেমিক্যাল গুলির নাম এবং ব্যবহার

ডাইং ফিনিশিং এ ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোর নাম এবং ব্যবহার জেনে নিন : ১. সোডা  :  কালার ফিক্সং  করে কোভেলেন্ট বন্ড তৈরি করে। তাছাড়া PH কন্ট্রোল , ফেব্রিকের এবজরবেন্সি বাড়ানোর জ...

Countries in the World

This website uses cookies to ensure you get the best experience on our website. Learn more Got it! Countries in the World: 195 # Country Population (2020) Land Area (Km²) 1 China 1,439,323,776 9,388,211 2 India 1,380,004,385 2,973,190 3 United States 331,002,651 9,147,420 4 Indonesia 273,523,615 1,811,570 5 Pakistan 220,892,340 770,880 6 Brazil 212,559,417 8,358,140 7 Nigeria 206,139,589 910,770 8 Bangladesh 164,689,383 130,170 9 Russia 145,934,462 16,376,870 10 Mexico 128,932,753 1,943,950 11 Japan 126,476,461 364,555 12 Ethiopia ...