Skip to main content

বনসাই

বনসাই এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ  নিয়ামাবলীঃ

১। বনসাই শিল্পী গুন অর্জন এর জন্য অবশ্যই বাস্তব অভিজ্ঞাতার প্রয়োজন। নিজে কাজ না করলে কখনো  তা অর্জন করা সম্ভব না। যেমনঃ
একজন মানুষ সাইকেল  চালানো অনেকবার দেখলো এবং তা নিয়ে  স্টাডি করলো সে কি সাইকেল চালাতে পারবে?
পারবে না।ঠিক একইভাবে বনসাই করার জন্য শুধুমাএ বনসাই দেখলে বা তা নিয়ে  স্টাডি করলে হবে না নিজে কাজ করে তা বাস্তব অভিজ্ঞাতার মাধ্যমে বনসাই শিখতে  হবে।

২। বনসাই উপযোগী গাছ সমূহঃ অশ্বথ, বাংলা বট, বাউবাব, ভেলর বট, গোল্ডেন পান্ডা, হানিলোকাস, ফাইকাস, বেঞ্জা‌মিনা, কামিনী, তমাল, ল‌রোপেটালাম, পাউডার ফাব, চাই‌নিজ এলম, ফ‌ুকেন টি, জেড প্লান্ট, জাম, নিম, মাদরাজি বট, বকুল, জিলাপি, পাকুড়, তেতুল,  কতবেল, ছাতিম, হিজল, ঝাউগাছ, জুনিপার, সা‌ফিলারা, করমচা, সেত চন্দন, অমিয়ফেরা, ‍ড্রপ কামিনী, কৃষ্ণচূড়া, রধাচূড়া, ডা‌লিম, কামরাঙ্গা, থাই সফেদা,  আমলকি, রঙ্গন, বাগান বিলাস, জামরুল, চায়না বট, ফাইকাস ভাই‌রেন, ফাইকাস রেটুসা, যজ্ঞ ডুমুর, ফাইকাস  লঙ্গীফলিয়া, জাবুটিকাবা, থাই চেরী, ফুরুস চেরী, অর্জুন, ফাইকাস জির, ফাইকাস নুডা  শাওড়া, ঘূণর্ণিবীচি, বৈচি, টগর ফুল, গন্ধরাজ, এজেলিয়া, পটোকারপাস, হাসনাহেনা, ব্যাংকক বগেনভিলিয়া, ইত্যাদি।

৩। নতুন গাছ সংগ্রহ করার পর  এর সামনের দিক নির্বাচন এবং ডাল গুলি  নির্বাচন করতে হবে। অতিরিক্ত ডাল কেটে ফেলত হবে। যা ৪০% বনসাই এর কাজ করবে।

৪। বনসাই করতে প্রাথমিক ভাবে যেসকল টুলস ব্যবহৃত হয় যেমনঃ সিকেচার, কনকেপ্ট, কাচি, নিরানী, ধরালো চাকু, আড়ি, হেকশবেল্ড, বেলচা, কোদাল, সাবল, গোল বাটাল ইত্যাদি।

৫। বনসাই এর বিভিন্ন স্টাইল সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে যেমনঃ Informal Upright, Formal Upright, Root Over Rock, Broom, Cascade, Semi Cascade,  Multi Trunk, Clump Style, Landscape, Forest Style, Exposed Root style ইত্যাদি।

৬। নতুন গাছ লাগানোর সময় গাছ অনুযায়ী পট নির্বাচন করতে হবে। পট এ পানি নিশ্কাশন এর জন্য অবশ্যই ছিদ্র থাকতে হবে। পাত্র বড় হলে খেলা বা টপ ভাঙ্গা দেওয়ার পর কয়লা গুড়া, মোটা বালি ১ কেজি এবং ইটের কুচি দিন এতে পানি নিষ্কাশন ঠিক থাকে।

৭। ভা‌লো প‌লি মা‌টি ৩০%, ভালো গোবর সার ৩৫%, ভা‌র্মি ক‌ম্পোষ্ট ১০%, হা‌ড়ের গু‌ড়ো ১৫%,  পটাশ ৫% মি‌শি‌য়ে মা‌টি তৈরী কর‌তে হ‌বে।
যেসব গাছ পানি কম লাগে  যেমনঃ (জেড পাল্ট) এর জন্য মাটি আলাদাভাবে বানানোর নিয়াম, ভা‌লো প‌লি মা‌টি ২০%, ভালো গোবর সার ২৫%, ভা‌র্মি ক‌ম্পোষ্ট ১০%, হা‌ড়ের গু‌ড়ো ১৫%, ইট এর গু‌ড়ো ১৫%, মোটা বালু ১৫% মি‌শি‌য়ে মা‌টি তৈরী কর‌তে হ‌বে।
সংগ্রহীত নতুন গাছে জন্য মাটি বানানোর নিয়ম, ভা‌লো প‌লি মা‌টি ৬০% ভালো গোবর সার ৪০% রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যাবেনা।

৮। নিয়মিত পা‌নি দি‌তে হ‌বে, একবার পা‌নি দেবার পর মা‌টি না শুকা‌নো পর্যন্ত ২য় বার  পা‌নি দে‌বেন না। সপ্তা‌হে একবার পা‌নি স্প্রে কর‌লে পাতা সজীব থা‌কে ও রোগ কম হয়।

৯। বনসাই, প্রী-বনসাই, বনসাই ম্যা‌টে‌রিয়াল ছা‌দে বা বাই‌রে ‌রো‌দে রাখা উত্তম। ঘ‌রে রাখ‌লে টানা ২ দি‌নের বে‌শি না রাখাই উত্তম।

১০। পূর্ণাঙ্গ বনসাই না হ‌লে ভারসাম্য রে‌খে কাটছাট কর‌তে হ‌বে, বেশী কা‌টিং করা যা‌বেনা, বছ‌রে দু-একবার ডিফ‌লি‌য়েশন  সব পাতা একসা‌থে ফে‌লে দিয়ে কর‌তে হ‌বে। প্র‌য়োজন অনুযায়ী ডাল প‌রিপক্ক হওয়ার পর কাট‌তে হ‌বে। যদি কনো ডাল মোটা করতে চান তাহলে ডালটির মাথা কাটবেন না।

১১। রোগ হ‌লে বিষ/কীটনাশক/ছত্রাকনাশক স্প্রে কর‌তে হ‌বে। বনসাই গাছ এর পট  অগাছা মুক্ত রাখবেন। যদি অগাছা হয় কাচি দিয়ে কেটে ফেলবেন। বনসাই গাছ এর পট নিরাবেন না। শীতকালে যেসব গাছের পাতা পড়ে যায় সে গাছ গুলোতে  সকল পকার সার পয়োগ থেকে বিরত থাকুন।

১২। বনসাই তৈরী সব সময় বড় পট বাবহার করা উত্তম এতে খুব তাড়াতাড়ি Complete  বনসাই বানানো যায়।

১৩। বছ‌রে একবার মা‌টি প‌রিবর্তন কর‌া উত্তম।মা‌টি প‌রিবর্তন এর সময় ৪" (Mother soil) রেখে বাকি মাটি ফেলে দিতে হবে। বাগান বিলাস গাছে বেশি ফুল পেতে চাইলে বছরে ২ বার, ৪ মাস পর পর (Mother Soil) রেখে বাকি ফেলে  মাটি দিয়ে, প‌রিবর্তন  করে ৩ দিন ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে রোদে দিতে হবে। অন্য সকল গাছ ৭ দিন ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।

১৪। অনেকে মনে করে যে তার পেচালে এবং বার বার কাটিং করলে বনসাই হয়ে যাবে, কিন্তু এটা ভুল ধারনা। বর্ষাকালে গাছ ওয়ারিং থেকে বিরত থাকুন। ওয়ারিং করলে  ৪০ দিন পর খুলে দেখতে হবে। যদি ডাল ঠিকভাবে না থাকে পুনরায়  ওয়ারিং করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে গাছে গভীর দাগ না পরে।

১৫। সম্পুর্ণ  বনসাই হয়ে যাওয়ার পর উপযোগী বনসাই পট নিবার্চন করে ভালভাবে পটিং করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ বনসাই হবার পর বনসাই প‌টে দে‌বেন, আ‌গে না।পূর্ণাঙ্গ বনসাই হয়ে যাওয়ার পর পাতা ছোট রাখার জন্য গাছ এর প্রকারভেদ অনুযায়ী প্রুনিং করতে হবে।

১৬। বনসাই করতে চাইলে গাছের ভাষা বুঝতে হবে। তা গাছের পাতা দেখে বুঝতে হবে যে গাছের কি দরকার। এর জন্য গাছ নিয়ে বেশি বেশি পরীক্ষা করতে হবে।

লেখাঃ বনসাই শিল্পী খন্দকার আকিব জাবেদ

Comments

  1. কিনতে চাই। দাম কত?

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular Posts

টেক্সটাইল ডাইং কেমিক্যাল গুলির নাম এবং ব্যবহার

ডাইং ফিনিশিং এ ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোর নাম এবং ব্যবহার জেনে নিন : ১. সোডা  :  কালার ফিক্সং  করে কোভেলেন্ট বন্ড তৈরি করে। তাছাড়া PH কন্ট্রোল , ফেব্রিকের এবজরবেন্সি বাড়ানোর জ...

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়া ও তাসবীহ সমূহ

জায়নামাযে দাঁড়ানোর দোয়া اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ حَنِيْفًا وَّمَا اٰنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ- উচ্চারণ-ইন্নি ওয়াজ্জা...

হুমায়ুন আহমেদ - এর উক্তি সমূহ

১. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে ভালবাসা। ২. ভালোবাসা ও ঘৃনা দুটোই মানুষের চোখে লিখা থাকে। ৩. একজন সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে দেখা ও তাকে অসুন্দর হিসেবে আবিষ্কার করার মধ্যবর্তী স...