Skip to main content

অন্নপ্রাশন বা মুখেভাত

অন্নপ্রাশন বা মুখেভাত কী?

সংস্কৃতে ‘অন্নপ্রাশন’ মানে হচ্ছে “ভাত খাওয়ানো”। অন্নপ্রাশন বা মুখে ভাতের অনুষ্ঠানটি বাচ্চাকে শক্ত খাবার খাওয়ানোর পর্ব শুরু উদযাপনের অনুষ্ঠান। একটু হেরফের হলেও দেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই প্রথাটি পালন করা হয়।

অন্নপ্রাশন কেন করা হয়?

শিশু যখন তরল খাবার ছেড়ে শক্ত খাবার খাওয়ার উপযুক্ত হয় তখন অন্নপ্রাশন করা হয়। এটি শিশুর ৫ মাস বয়সের পর এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে যেকোনো সময় করা হয়। ছেলেদের জন্য এটি জোড় সংখ্যার কোন মাসে, যেমন ৬ষ্ঠ বা ৮ম মাসে, এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে এই অনুষ্ঠানটি বেজোড় মাসে, যেমন ৫ম বা ৭ম মাসে করা হয়।

অন্নপ্রাশন কোথায় করা যায়?

অন্নপ্রাশন নিজ বাড়িতে বা দাদা বা নানার বাড়িতে করতে পারেন। অনুষ্ঠানটি বাড়িতে করলে ধর্মীয় অনুষঙ্গগুলো পালনের জন্য অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিতে পারেন।

অন্নপ্রাশন কীভাবে করে?

অন্নপ্রাশন বাবা-মা মা দাদা-দাদি/নানা-নানির ঠিক করা কোন বিশেষ দিনে করা হয়। বাচ্চাকে এদিন নতুন জামা-কাপড় পরানো হয়। অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয় শিশুর জন্য ধর্মীয় মতে প্রার্থনার মাধ্যমে।, এবং এরপর তাকে প্রথমবারের মত কোন শক্ত খাবার খাওয়ানো হয়। এটি একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান এবং এতে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকে দাওয়াত করা হয়।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানটির পর একটি খেলা খেলা হয় যাতে কলাপাতায় বা রূপার ট্রেতে বিভিন্ন প্রতীকী জিনিস সাজিয়ে শিশুর সামনে রাখা হয়। বই (জ্ঞান আহরণের প্রতীক), গহনা (ধনসম্পদ আহরণের প্রতীক), কলম (বিচক্ষণতার প্রতীক), মাটি (জায়গাজমির প্রতীক), বা খাদ্যসামগ্রী (খাবারের প্রতি আগ্রহের প্রতীক) কলাপাতায় বা রূপোর ট্রেতে সাজিয়ে শিশুর সামনে রাখা হয়। শিশু এর থেকে যে কোন একটি জিনিস তুলে নেবে এবং সেটিই তার ভবিষ্যতের আভাস দিবে বলে মনে করা হয়।

শিশুকে কী ধরনের খাবার দেয়া হয়?

প্রথমবার শিশুর মুখে মিষ্টি কিছু দিতে চাইলে ক্ষীর/পায়েশ তৈরি করতে পারেন। আবার গলা ভাত এর সাথে ঘি, অল্প একটু লবণ দিয়ে এবং ভালভাবে রান্না করা ডালও দিতে পারেন, যদিও বাচ্চার থালায় অনেক রকমের খাবার সাজিয়ে দেয়া হয়। এদিন বাহারি রকমের রান্না করা হয়, যেমন কয়েক রকমের ভাত/পোলাও, সব্জি, মাংস, মাছ এবং ক্ষীর।

অন্নপ্রাশনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ

অনুষ্ঠানের আগে আপনার শিশুর পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিশ্চিত করুন।অনুষ্ঠান শুরু করা হয় সকালের গোসলের ঠিক পর পর বা দুপুরের খাওয়ার আগে আগে।অনুষ্ঠানে খুব কাছের আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের বাইরে কেউ না থাকাই ভাল। বেশি লোক হলে আপনার শিশু ঘাবড়ে যেতে পারে।শিশুর জামা কাপড়ের ব্যাপারে যত্নবান হোন, কারণ জরি, কাঁচ বা চুমকির কাজ, ভারী এমব্রয়ডারি, নকসা বা সুতার কাজ করা জামা কাপড় বাচ্চার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নিন।শিশুর খাবার যেন টাটকা এবং রুচিসম্মতভাবে প্রস্তুত করা হয় তা নিশ্চিত করুন।বাচ্চার মুখের চারপাশে লেগে থাকা বাড়তি খাবার মুছে দেয়ার জন্য ছোট একটি তোয়ালে হাতের কাছে রাখুন।একজন বা দুজন খুব কাছের আত্মীয়কে বাচ্চার মুখে খাবার দিতে দিন, পরিবারের সবাইকে নয়।অতিথিদের ধন্যবাদসরূপ দেয়ার জন্য ছোট মিঠাইয়ের বাক্স রাখুন।অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে ভুলবেন না যেন!

সূত্রঃ মায়া আপা

Comments

Popular Posts

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়া ও তাসবীহ সমূহ

জায়নামাযে দাঁড়ানোর দোয়া اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ حَنِيْفًا وَّمَا اٰنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ- উচ্চারণ-ইন্নি ওয়াজ্জা...

টেক্সটাইল ডাইং কেমিক্যাল গুলির নাম এবং ব্যবহার

ডাইং ফিনিশিং এ ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোর নাম এবং ব্যবহার জেনে নিন : ১. সোডা  :  কালার ফিক্সং  করে কোভেলেন্ট বন্ড তৈরি করে। তাছাড়া PH কন্ট্রোল , ফেব্রিকের এবজরবেন্সি বাড়ানোর জ...

হুমায়ুন আহমেদ - এর উক্তি সমূহ

১. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে ভালবাসা। ২. ভালোবাসা ও ঘৃনা দুটোই মানুষের চোখে লিখা থাকে। ৩. একজন সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে দেখা ও তাকে অসুন্দর হিসেবে আবিষ্কার করার মধ্যবর্তী স...